বাংলা'র ক্রীড়াজগতের অতীতের উজ্জ্বল অধ্যায়ের সাক্ষবহনকারী একটি জনপ্রিয় ক্রীড়া পত্রিকা
সম্পাদক - অতুল মুখার্জী
প্রকাশ কাল - ১৯৭৭ - ১৩৮৯প্রকাশক - ইত্যাদি প্রকাশনী
ইত্যাদি প্রকাশনার আরো একটি অনবদ্য অবদান খেলার আসর পত্রিকাটি ১৯৭৭ সালের ১লা মে আত্মপ্রকাশ করে অতুল মুখার্জী সম্পাদনায়। শুরু থেকেই এর বিষয় বৈচিত্র সকলের মন কেড়ে নেয়। শুধু খেলাকে কেন্দ্র করে আলাদা পত্রিকা হতে পারে, তা এই পত্রিকা করে দেখিয়েছে। পরবর্তীতে আরো অনেক পত্রিকা প্রকাশ হয়, যথা খেলার কথা, খেলার কাগজ, খেলা। তবে শেষটি ছাড়া আর কেউ তেমন সুনাম অর্জন করতে পারেনি।
বাংলা ভাষায় বহুদিন ধরে বিভিন্ন রুচির পাঠক পাঠিকাদের জন্য নানা ধরণের পত্রিকা প্রকাশিত হয়ে আসলেও ৭০ দশকের প্রায় শেষদিক পর্যন্ত ক্রীড়ানুরাগীদের জন্য কোনও খেলার পত্রিকা প্রকাশ হতোনা। অথচ সেই সময়ে বাংলার ফুটবল ময়দানে রাজত্ব করে চলেছেন একঝাঁক স্বপ্নের তারকা ফুটবলার আর ভারতীয় ক্রিকেটের আকাশে বিরাজ করছেন বেশ কয়েকজন উজ্জ্বল নক্ষত্র, যাদেরকে বহুদিন পরেও পরবর্তী প্রজন্মের ক্রীড়ানুরাগীরাও স্মরণ করবেন। খেলা পাগল বাঙালির কাছে খেলার খবর পাওয়ার জন্য তখন ছিল একটাই মাধ্যম - দৈনিক সংবাদপত্রের খেলার পাতা।
বাংলার পত্রিকা জগতে এই শূন্যস্থানটি প্রথম যে পত্রিকাটি পূরণ করেছিল সেটি ছিল সেই সময়ের প্রখ্যাত সাংবাদিক অশোক চৌধুরী সম্পাদিত ও 'ইত্যাদি প্রকাশণী' থেকে প্রকাশিত "খেলার আসর"। "খেলার আসর" পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়েছিল ১লা মে ১৯৭৭ সালে। সেই সময়ে এটি পাক্ষিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হওয়া শুরু হয়েছিল। সূচনালগ্ন থেকেই এটি প্রবল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। কেবলমাত্র ফুটবল ও ক্রিকেট নয়, খেলাধুলোর তুলনামূলকভাবে কম জনপ্রিয় অন্যান্য ক্ষেত্র যেমন হকি, টেনিস, ব্যাডমিন্টন, ভলিবল, বাস্কেটবল, কবাডি প্রভৃতির খবরাখবরও বিস্তারিতভাবে পত্রিকাটিতে প্রকাশিত হতো।
এই পত্রিকাতেই সূচনার সংখ্যাতে লেখার মধ্য দিয়ে ক্রীড়া সাংবাদিকতার জীবন শুরু করেছিলেন প্রখ্যাত সাংবাদিক শ্রী অশোক দাশগুপ্ত। এছাড়াও শুরুর সময় থেকেই যে সমস্ত ক্রীড়া সাংবাদিকের লেখা এখানে নিয়মিতরূপে প্রকাশিত হতো তাঁদের মধ্যে ছিলেন অতুল মুখার্জী, রূপক সাহা, হরিপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত সরকার, হিমানীশ গোস্বামী, দিলীপ সরকার প্রভৃতি। এছাড়াও অতীত দিনের বেশ কয়েকজন বিখ্যাত খেলোয়াড়ও নিয়মিত লিখতেন। আর প্রকাশিত হতো 'স্ট্রাইকার' ছদ্মনামধারী একজনের লেখা। আজ আর সঠিক মনে নেই, তবে 'স্ট্রাইকার' ছদ্মনামের লেখক ছিলেন সম্ভবত মতি নন্দী স্বয়ং। এক রীতিমত জমজমাট ব্যাপার ছিল "খেলার আসর"।
অশোক দাশগুপ্ত তাঁর একটি লেখায় লিখেছিলেন পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যা সম্ভবত ছাপা হয়েছিল পাঁচ হাজার, বাজারে আসার ঘন্টা তিনেকের মধ্যেই সব বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় সংখ্যার প্রিন্ট অর্ডার ছিল দশ হাজার। তৃতীয় সংখ্যা থেকেই "খেলার আসর" অফসেটে ছাপা হতে থাকে। মুদ্রিত সংখ্যা কুড়ি - পঁচিশ হাজার। তিনটি সংখ্যাতেই কভার স্টোরি লিখেছিলেন এই পেশায় নবাগত শ্রী অশোক দাশগুপ্ত - প্রথম সংখ্যায় শ্যাম থাপা, দ্বিতীয় সংখ্যায় উলগানাথন ও তৃতীয় সংখ্যায় লতিফুদ্দিন। বছর দুয়েকের মধ্যেই সেই সময়ের প্রতিষ্ঠিত অন্যান্য ইংরেজি ক্রীড়া ম্যাগাজিনকে পেছনে ফেলে "খেলার আসর" ভারতবর্ষের সর্বাধিক বিক্রীত বাংলা ক্রীড়া ম্যাগাজিনের শিরোপা লাভ করে। এরপরেই বাজারে চলে আসে আরেকটি জনপ্রিয় ক্রীড়া পত্রিকা - প্রথমে 'খেলার কথা', তারপর 'খেলার কাগজ', শেষে 'খেলা'। 'খেলার আসর'এর একচ্ছত্র আধিপত্য কিছুটা ধাক্কা খায়। এছাড়াও 'ইত্যাদি প্রকাশণী' থেকে আরো কয়েকটি জনপ্রিয় পত্রিকা প্রকাশিত হতো। তাদের দিকে নজর দিতে গিয়ে সম্ভবত 'খেলার আসর' কিছুটা উপেক্ষিত হচ্ছিল।৮০-র দশকের মাঝামাঝি সময় থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাজারে এই পত্রিকার পাঠক সংখ্যা কিছুটা হ্রাস পায়। তবে বর্তমানে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করলে দেখা যায় যে 'খেলার আসর'ই ছিল সামগ্রিক অর্থেই একটি পরিপূর্ণ খেলার পত্রিকা। অন্য জনপ্রিয় খেলার পত্রিকাতে যেখানে ফুটবল আর ক্রিকেটই অধিক অগ্রাধিকার পেতো, 'খেলার আসর' কিন্ত সেখানে সবধরণের খেলাধুলোর রিপোর্টিং প্রকাশ করার মধ্যে একটি ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করতো।এরপর ১৯৮৬ সাল থেকে 'ইত্যাদি প্রকাশণী'র আর্থিক সংকট শুরু হয়। এর ফলে এই প্রকাশণী থেকে প্রকাশিত অন্যান্য জনপ্রিয় পত্রিকাগুলির সঙ্গে ১৯৮৯ সালে 'খেলার আসর' পত্রিকাটিও বন্ধ হয়ে যায়। 'খেলার আসর'এর আয়ুস্কাল যদিও মাত্র ১১বছর ছিল, তবুও পত্রিকাটির স্মৃতি আজও অসংখ্য ক্রীড়ানুরাগীর স্মৃতিপটে অমলিন। পত্রিকাটির কোনও সংখ্যাই আজ আর পুরনো বইয়ের দোকানে পাওয়া যায়না। Internet এও 'খেলার আসর' বা অন্য কোনো বাংলা খেলার পত্রিকার হদিস পাওয়া যায়না। অর্থাৎ জনপ্রিয় এই পত্রিকাটি বর্তমানে এক অর্থে দুষ্প্রাপ্য । খেলার ওপর সাহিত্য বাংলা ভাষায় খুব বেশী নেই। অবশ্যই পথিকৃত মতি নন্দী। এই পত্রিকার হাত ধরে বাংলা ভাষা অনেক সাহিত্য খেলার ওপর পেয়েছে।
এই প্রকাশনীর বেশ কিছু দুর্দান্ত পত্রিকা ছিল। যথা - সমকালিন বিষয় বস্তুর ওপর সাপ্তাহিক পত্রিকা "পরিবর্তন", খেলাধূলোর পত্রিকা "খেলার আসর, কিশোরদের মনের মতো পত্রিকা "কিশোর মন", সাহিত্য বিষয়ক পত্রিকা "শিলাদিত্য।", শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য "সুকন্যা"।
১৯৮৬ সালের শেষ দিকে সুপ্রভাত নামে একটি দৈনিক সংবাদপত্র বের করবার পরিকল্পনা নেয় এই প্রকাশনী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটি আর দিনের আলো দেখেনি এবং এরপর প্রকাশনীটিই বন্ধ হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে অপমৃত্যু হয় এতগুলো অনিন্দ সুন্দর পত্রিকার।
কৃতজ্ঞতা - অভিজিৎ ব্যানার্জী
প্রকাশকাল | সূচিপত্র লিঙ্ক | ডাউনলোড লিঙ্ক |
---|---|---|
১৯৭৭ | মে ০১, ১৬, জুন ০১, ১৬, জুলাই ০১, ১৬, আগস্ট ০১, ১৬, সেপ্টেম্বর ০১, ১৬, নভেম্বর ০১, ১৬, ডিসেম্বর ০১, ১৬ , শারদীয়া | |
১৯৭৮ | জানুয়ারী ০১, ১৬, ফেব্রুয়ারী ০১, ১৬, মার্চ ০১, ১৬, এপ্রিল ০১, ১৬, ২৮, মে ০৫, ১২, ১৯, ২৬, জুন ০২, ০৯, ১৬, ২৩, ৩০, জুলাই ০৭, ১৪, ২১, ২৮, আগস্ট ০৪, ১১, ১৮, ২৫, সেপ্টেম্বর ০১, ৮, ১৫, ২৯, অক্টোবর ২০, ২৭, নভেম্বর ০৩, ১০, ১৭, ২৪, ডিসেম্বর ০১, ০৮, ১৫, ২৯, শারদীয়া | |
১৯৭৯ | , জুন ০১, ০৮, ১৫, ২২, ২৯, জুলাই ০৬, ১৩, ২০, ২৭, আগস্ট ০৩, ১০, ১৭, ২৪, ৩১, সেপ্টেম্বর ০৭-১৪, ২১, ২৮, অক্টোবর ০৫, ১৯, ২৬, নভেম্বর ০২, ০৯, ১৬, ২৩, ডিসেম্বর ০৭, ১৪, ২১, ২৮, শারদীয়া | |
১৯৮০ | জানুয়ারি ০৪, | |
১৮৮১ | ||
১৯৮২ | , ফেব্রুয়ারী ১৯, | |
১৯৮৩ | , মে ২৭, | |
১৯৮৪ | ||
১৮৮৫ | ||
১৮৮৬ | ||
১৮৮৭ |
I have a copy of Khelar Asor magazine of 30th May 1986 subscription. I want to share the same with you. Please let me know what course of action I have to take for this.
ReplyDeleteWith Regards,
Sudipta Sarkar
Please send scan copy in 300 dpi to dhulokhela.gmail.com or send by post. Address will be provided in return mail, if you want to send it.
DeleteI have the copy of Anandamela Pele Special issue. Want to share with you. Please tekl me what to do.
ReplyDeletePlease mention issue No. and year.
Delete১৯৭৭-এর শারদীয়া সংখ্যাটা ডাউনলোড করা যাচ্ছে না। অ্যাকসেস চাইছে। কাইন্ডলি দেখবেন ... :)
ReplyDeleteআমি খুঁজছি ১ জানুয়ারী ১৯৮২ সংখ্যা
ReplyDeleteGreat initiative. Khelar Asar October 1977 issue and Sharadiya issue please.
ReplyDeleteশারদীয়া সংখ্যা ডাউনলোড হচ্ছে না। কী ভাবে করা যেতে পারে, জানালে ভালো হয়।
ReplyDeleteআমি সুদীপ মৈত্র। শারদীয়া খেলার আসর ডাউনলোড করা যাচ্ছে না। কীভাবে করা যেতে পারে? এমনকি কমেন্ট করার জন্যও লগ ইন হচ্ছে না। সেটাও বুঝতে পারলাম না কেন?
ReplyDeleteসাইটে ঘোষণা ট্যাবে লেখা আছে কি করে ডাউনলোড করতে হবে, একটু দেখে নিন। আর সাইন ইন করে কমেন্ট করলে এনোনিমাস ভাবে কমেন্ট হবে না।
Delete